বেফাক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে ওমরাহ পালনে সৌদি আরব যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকার শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসার শিক্ষার্থী আকবর শিকদার। ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় ‘সানাবিয়া উলিয়া’ জামাতে মেধা তালিকায় ১৪ তম স্থান অধিকার করে আকবর। এ কারণে পুরস্কার হিসেবে তাকে ওমরাহ পালনের পুরস্কার দিয়েছে মাদরাসার মুতাওয়াল্লী মুহাম্মাদ ইমাদুদ্দীন নোমান।
আগামী ২৪ আগস্ট দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মক্কার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন আকবর শিকদার। তার সঙ্গে মাদরাসার উস্তাদ প্রতিনিধি হিসেবে যাচ্ছেন মাওলানা রাশেদুজ্জামান কাসেমী। ১৪ দিনের সফর শেষে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর তারা দেশে ফিরবেন বলে জানা যায়।
বর্তমানে জালালাইন জামাতে অধ্যয়নরত আকবর শিকদারের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা।বাবা মকসেদ শিকদার কৃষিকাজ করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন। আকবর ইলম দীন অর্জনের জন্য ভর্তি হয় ঢাকার শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসায়। পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের মাধ্যমে ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত সে।
মুতাওয়াল্লী, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আকবর শিকদার বলে, “প্রথমত মহান আল্লাহ তায়াল অশেষ শুকরিয়া জানাই। দ্বিতীয়ত, আমাদের মুতাওয়াল্লী মহোদয়, মাদরাসার সকল উস্তাদ ও আমার সহপাঠীদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সকলের সহযোগিতা, স্নেহ ও দোয়ার মাধ্যমে ইলমে দীনের খাদেম হতে চাই।”
ঢাকার শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসার মুতাওয়াল্লী মুহাম্মাদ ইমাদুদ্দীন নোমান বলেন, কুরআনের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগী করে তুলতে শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা সবসময় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। শিশুদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে কুরআন-হাদিসের ইলম অর্জনে উৎসাহ প্রদানের লক্ষেই আমাদের এ উদ্যোগ। এখন থেকে প্রতি বছর মেধাবী ছাত্রদের আল্লাহর ঘর জিয়ারতের এই ধারা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক কাসেমী আওয়ার ইসলামকে বলেন, বেফাক ও হাইয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় প্রথম স্থান থেকে দশম স্থান পর্যন্ত সিরিয়ালে থাকতে পারলে তাকে ওমরা পালনের সুযোগ করে দেওয়া হবে। আমাদের মুহতারাম মুতাওয়াল্লী মুহাম্মাদ ইমাদুদ্দীন নোমান এই ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমাদের মাদরাসায় সূচনা থেকেই শিক্ষা-দীক্ষা আদব-আখলাকে ছাত্রদের অনন্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এই পুরস্কারের মাধ্যমে ছাত্রদের মধ্যে দিনদিন পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।এবারে আকবর শিকদারের মাধ্যমে ওমরা পালনের যাত্রা শুরু হল, এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
এছাড়াও প্রতিবছর ১ জন উস্তাদও ওমরাহ পালনের সুযোগ পাবেন। বিগত বছর মাদরাসার আরেকজন উস্তাদ মুফতি এনায়েত কবিরের মাধ্যমে সেই যাত্রা শুরু হয়েছে বলেও জানান মাওলানা মাহফুজুল হক কাসেমী। তিনি আরও বলেন, আমাদের মাদরাসায় যারা পরীক্ষায় ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জন করে তাদের খাবার সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেওয়া হয়। তাদের জন্য একটি শিক্ষাবৃত্তিও চালু করা হয়েছে। প্রতি ক্লাসের মুমতাজ শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি নাস্তা পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয়। ছাত্রদের পড়াশোনার প্রতি উৎসাহিত করতে ২০০৫ সাল থেকে নিয়মটি চালু আছে।
প্রসঙ্গত, বিগত শিক্ষাবর্ষ থেকে শেখ জনূরুদ্দীন র. দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসা বাংলাদেশের কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক)-এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা ও আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়ার কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীকে মাদরাসার মুতাওয়াল্লী মুহাম্মাদ ইমাদুদ্দীন ওমরাহ পালনের সুযোগ করে দেবে।এই ঘোষণার অংশ হিসেবেই ওমরাহ যাচ্ছে আকবর শিকদার।